মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভ কোর্স - উজ্জ্বল কেরিয়ার গড়ে তোলার অন্যতম সেরা উপায়
মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভ শব্দটির সাথে আমরা সকলেই পরিচিত। ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি গুলি যে কর্মীদের সাহায্যে নিজেদের পণ্য যথা ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জামের প্রচার ও বিক্রির ব্যবস্থা করে তাদেরই মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভ বলা হয়। এদের ক্রেতারা সাধারণত ডাক্তার ,নার্স ও ওষুধের দোকান গুলি হয়ে থাকে। মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভরা তাদের কোম্পানির পণ্য সম্পর্কে বাজারে সচেতনতা তৈরি করেন ,প্রয়োজনীয় প্রশ্নের উত্তর ও উপদেশ দেন এবং নতুন পণ্যের (ওষুধ ) প্রচার করেন।
এই পেশাটি আমাদের দেশে মোটেই নতুন নয় কিন্তু বর্তমানে এই কাজের চাহিদা ক্রমবর্ধমান। স্কুল কলেজের গন্ডি পেরোনোর পর প্রায় সব পড়ুয়া ও তাদের মা বাবারা কেরিয়ার নিয়ে উদ্বিগ্ন থাকেন এবং বিভিন্ন জব ওরিয়েন্টেড কোর্স করার কথাও ভাবেন। সেই পরিপ্রেক্ষিতে দাঁড়িয়ে মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভ কোর্স একজন ছাত্রছাত্রীর উজ্জ্বল কেরিয়ার গড়ে তুলতে অগ্রণী ভূমিকা নিতে পারে। এই কারণেই ছাত্রছাত্রীদের উন্নত ভবিষ্যতের পথ নিশ্চিত করতে আজ আমরা এই কোর্সটির সম্পর্কে বিস্তারিত জানাবো।
ভারতবর্ষে যদিও মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভ হওয়ার জন্য কোনো নির্দিষ্ট নির্ণায়ক বা ক্রাইটেরিয়া নেই তবে বিশেষজ্ঞদের মত অনুযায়ী, সায়েন্স গ্রাজুয়েটদের সম্ভাবনা বেশি থাকে এবং বিফার্ম করা থাকলে বিশেষ সুবিধা পাওয়া যায়। এখন সমস্ত বড় ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি গুলি প্রশিক্ষিত এমআর ছাড়া চাকরিতে বহাল করেনা। তাই যদি কেউ এই পেশায় পা রাখতে চান তবে অবশ্যই কোর্স করে বা উপযুক্ত প্রশিক্ষণ নিয়েই এগোনো উচিত।
মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভ এর পেশায় প্রয়োজনীয় গুণাবলী
১) ধৈর্য - ঘন্টার পর ঘন্টা ডাক্তারদের জন্য অপেক্ষা করতে হয় ,সুতরাং ধৈর্যের ঘাটতি হলে চলবেনা।
২) বিক্রি করার ক্ষমতা - যে কোম্পানির হয়ে কাজ করছেন তাদের সমস্ত প্রোডাক্ট বিক্রি করতে জানতে হবে ,পণ্য না বেচতে পারলে চাকরি থাকবে না।
৩) আত্মবিশ্বাস -এটাই এই কাজের মূলমন্ত্র ,আত্মবিশ্বাস থাকলে ভালো এম আর হওয়া যায়।
৪)সাংগঠনিক দক্ষতা -ভালো সাংগঠনিক দক্ষতা এই কাজে এগিয়ে যেতে জরুরি।
৫)বাণিজ্যিক সচেতনতা - পণ্য শুধু বিক্রি করলেই হবে না ,বাজারে অন্য কোম্পানির পণ্যের নিজেদের কোম্পানির পণ্যের তুলনা ও প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার সবরকম প্রচেষ্টা প্রতিনিয়ত করে চলতে হব।
মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভ পে স্কেল /স্যালারি
ক্যাটাগরি / প্রোফাইল |
স্যালারি |
ইনিশিয়াল লোয়েস্ট স্যালারি |
১.৮ লক্ষ প্রতি বছর |
ইনিশিয়াল হাইয়েস্ট স্যালারি |
৪.৮৮ লক্ষ প্রতি বছর |
ইনিশিয়াল অ্যাভারেজ স্যালারি |
২.৯ লক্ষ প্রতি বছর |
ইনিশিয়াল স্যালারি ফর ফার্মাসিউটিকাল সেলস রিপ্রেসেন্টেটিভে |
২০ হাজার প্রতি মাস |
ইনিশিয়াল স্যালারি ফর এরিয়া সেলস ম্যানেজার |
৪৫ হাজার প্রতি মাস |
ইনিশিয়াল স্যালারি ফর মেডিকেল সেলস রিপ্রেসেন্টেটিভ |
২২ হাজার প্রতি মাস
|
মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভ কোর্সের জন্য কয়েকটি ইনস্টিটিউট
- ক্যারিওগ্রাফ ইনস্টিটিউট অফ ম্যানেজমেন্ট স্টাডিস,কলকাতা ,শিলিগুড়ি ,দুর্গাপুর ,পাটনা।
- জর্জ টেলিগ্রাফ কলেজ ,কলকাতা
- ইনস্টিটিউট অফ ফার্মাসিউটিকাল এন্ড হেলথকারে ম্যানেজমেন্ট এন্ড রিসার্চ ,কলকাতা।
- এন্ডেভার ট্রেনিং ইনস্টিটিউট ফর ফার্মা সেলস ,কলকাতা।
- ইটালিক ফার্মা ,কলকাতা।
- ডি আই এম আর ফার্মা এডুকেশন ,দিল্লি
- সেন্ট্রাল ড্রাগ রিসার্চ ইনস্টিটিউট ,লাখনৌ।
- সাই রয়্যাল কলেজ,মিরাট।
- গার্বারে ইনস্টিটিউট অফ ক্যারিয়ার এডুকেশন এন্ড ডেভেলপমেন্ট , ইউনিভার্সিটি অফ মুম্বাই |
- বি আই আই টি ডিস্টেন্স এডুকেশন ইন জাগামারা ,ভবনেশ্বর।
ভারতে প্রচলিত মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভ কোর্স - আমাদের দেশে যে এম আর এর কোর্সগুলি প্রচলিত সেগুলির সময়সীমা দুই মাস থেকে এক বছর পর্যন্ত হয়। এগুলির মধ্যে সার্টিফিকেট কোর্স ও ডিপ্লোমা কোর্স গুলি অন্তর্ভুক্ত হয়।
১) সার্টিফিকেট কোর্স ইন মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভ ম্যানেজমেন্ট।
২) ভোকেশনাল ট্রেনিং ইন মেডিকেল সেলস রিপ্রেজেন্টেটিভ।
৩) ডিপ্লোমা ইন মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভ।
৪) মেডিকেল রিপ্রেসেন্টেটিভে অনলাইন ব্লেনডেড ট্রেনিং।
৫) ইন্ডাস্ট্রি সার্টিফিকেট অন মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভ ট্রেনিং।
মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভ কোর্স এ কি কি শিখতে হয়
ফার্মাসিউটিকাল ইন্ডাস্ট্রি
ফার্মাসিউটিকাল প্রোডাক্টস
ফার্মাসিউটিকাল প্রোডাক্টস ডিস্ট্রিবিউশন
হিউমান এনাটমি এন্ড ফিজিওলজি
মার্কেট রিসার্চ এন্ড এনালাইসিস
ফার্মাকোলজি
ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন
থেরাপিউটিক ড্রাগস্
ড্রাগ ফর্মুলারীজ
ফার্মাকোভিজিল্যান্স
ডিসিস ম্যানেজমেন্ট
ফার্মাসিউটিকাল মার্কেটিং
প্রি এন্ড পোস্ট সেলস একটিভিটিস
আই টি এন্ড কম্পিউটার এপ্লিকেশন
কমিউনিকেশন স্কিলস
অন্য যেকোনো পেশার মতো এম আর এর কাজেও পরিশ্রম ও অভিজ্ঞতার মূল্য সর্বাধিক। একজন সফল মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভ হওয়ার জন্য সঠিক সময় সঠিক প্রশিক্ষণের কোনো বিকল্প নেই। সেই কারণেই গ্রাজুয়েশনের পরে এই ফিল্ডে কাজ করতে হলে একটি ভালো সংস্থা থেকে উপযুক্ত কোর্স করে নিতে পারলে তবেই আগামী পথ অনেক মসৃন হয়ে যাবে।