আপনি কি কম্পিউটার এক্সপার্ট ? তাহলে এই ব্যবসাগুলি আপনার জন্য
আপনি কি একজন কম্পিউটার এক্সপার্ট ? আপনার কি দিন রাত কাটে কম্পিউটার ল্যাপটপের সামনে ?তাহলে বলতেই হচ্ছে যে কম্পিউটার সংক্রান্ত ব্যবসাই আপনার জন্য উপযুক্ত রোজগারের পথ। একুশ শতাব্দী হলো প্রযুক্তির শতাব্দী ,প্রতিদিন না না রকম নতুন প্রযুক্তি মানুষের জীবন যাত্রা কে প্রভাবিত করছে,পরিচালনা করছে আর সেই সঙ্গে বাড়ছে কাজের বাজারে প্রতিযোগিতা। এখনকার দিনে পড়াশুনাও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই টেকনোলজি নির্ভর হয়ে পড়েছে তাই বাচ্ছারা একদম প্রাইমারি থেকেই কম্পিউটারের শিক্ষা নিতে শুরু করছে। প্রতি বছর আমাদের দেশে লক্ষ লক্ষ ছেলেমেয়ে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং ,বি সি এ ,কম্পিউটার এপ্লিকেশন ইত্যাদি বিষয়ে গ্রাজুয়েট হচ্ছে এবং চাকরির বাজারে প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হচ্ছে , আজ তাই আপনাদের জন্য রইলো কম্পিউটার ও প্রযুক্তিকে সাথে নিয়ে কি কি ব্যবসা করতে পারেন।
কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টার : কম্পিউটার সেন্টারের বিজনেস একটি অত্যন্ত ভালো ও লাভজনক ব্যবসা। আপনি যদি কম্পিউটার এর বিষয় সাধারণের থেকে বেশি জানেন তাহলে আপনি এই ব্যবসা করতে পারেন,কম্পিউটার প্রশিক্ষণ এর চাহিদা বাজারে সবসময় থাকে।
ইন্টারনেট রিসার্চ এর ব্যবসা : ইদানিং সারা বিশ্বেই একটা বড় সমস্যা দেখা দিয়েছে ,সঠিক তথ্যের অভাব ,ইন্টারনেট এমন এক গোলক ধাঁধা যেখানে কোন তথ্য সত্যি কোনটা ভুল তা বিচার করা খুবই কঠিন। এখানে ইন্টারনেট রিসার্চ বা অনলাইন রিসার্চাররা ইন্টারনেটে উপলব্ধ তথ্য গুলি যাচাই করে সঠিক তথ্য আপলোড করেন এবং এই ব্যবসার খুবই রমরমা শুরু হয়েছে। আপনি যদি একজন ইন্টারনেট ও টেক স্যাভি মানুষ হন তাহলে এই ব্যবসা আপনার পক্ষে খুবই ভালো প্রমাণিত হতে পারে।
আইটি কনসালট্যান্ট এর ব্যবসা : আপনি কি একজন বিজনেস সফ্টওয়ার বিশেষজ্ঞ ?তাহলে আপনি একজন আইটি কনসালট্যান্ট হিসেবে কাজ করতে পারেন ,বহু কোম্পানি আছে যারা নিজেদের ব্যবসায়িক কাজে বিভিন্ন সফ্টওয়ার ও টেকনোলজি ব্যবহার করতে চান ,আপনি তাদের সাথে কনসালট্যান্ট হিসেবে যুক্ত হতে পারেন।
ফ্রিল্যান্স সফ্টওয়ার ডেভেলপার : আপনার যদি সফ্টওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ডিগ্রি থাকে তাহলে অবশ্যই আপনি একজন ফ্রিল্যান্স সফ্টওয়ার ডেভেলপার এর কাজ করতে পারেন ,স্বাধীন ব্যবসার মানসিকতা থাকলে এই কাজ করতে পারেন। বিভিন্ন কোম্পানির তাদের ওয়েবসাইট তৈরী ও মেন্টেন করার জন্য ফ্রীলান্স সফয়ার হায়ার করেন ,এই কাজে আর্থিক লাভ বেশ ভালো।
কল সেন্টারের ব্যবসা : বিনিয়োগের ক্ষেত্রে যদি আপনার কোনো সীমাবদ্ধতা না থাকে তাহলে আপনি কল সেন্টারের ব্যবসা করতে পারেন। প্রথম আপনাকে কি ধরণের কাল সেন্টার খুলতে চাইছেন সেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে এবং মার্কেট রিসার্চ করে তবেই এই ব্যবসায় নাম উচিত। বিনিয়োগ একটু বেশি হয় কিন্তু ব্যবসা দাঁড়িয়ে গেলে মুনাফাও খুব ভালো হবে ভবিষ্যতে ।
টেক ব্লগার : টেকনিক্যাল ব্লগিং খুবই ভালো কাজ যদি আপনি একজন কম্পিউটার এক্সপার্ট হন ,এই কাজে আপনি বিভিন্ন প্রজেক্ট ডকুমেন্ট করে বা অন্যদের কনটেন্ট ম্যানেজ করেও অর্থ উপার্জন করতে পারেন।
রিপেয়ার সার্ভিস প্রোভাইডার : কম্পিউটার রিপেয়ারিং সার্ভিস এর চাহিদা বাজারে আজকাল ভীষণ বেড়েছে ,এখন প্রায় সব কিছুই টেক নির্ভর তাই মানুষের রিপেয়ারিং সার্ভিসের বেশি প্রয়োজন পড়ছে ,আপনি রিপেয়ারিং এজেন্সি শুরু করে আপনার ভালো অর্থ উপার্জন হতে পারে।
অ্যাপ ডেভেলপার : আপনার যদি সফ্টওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং করা থাকে তাহলে আপনি একজন অ্যাপ ডেভেলপার হিসেবে কাজ করতে পারেন। কম্পিউটার,মোবাইল,ট্যাব ইত্যাদির জন্য অ্যাপ তৈরী করা ,টেস্ট করা ও প্রোগ্রামিং করাই প্রধান কাজ ,আপনি চাইলে কোনো কোম্পানির সাথে যুক্ত হয়েও এই কাজ করতে পারেন,সাধারণত ইনকাম রেট খুবই হাই থাকে এই ধরণের কাজে।
টেকনিক্যাল রাইটার : যারা সহজ ভাষায় কঠিন টেকনিক্যাল আর্টিক্যাল লেখেন ও মানুষকে বুঝতে সাহায্য করেন তাদেরই প্রধানত টেকনিক্যাল রাইটার বলা হয় ,আর্টিক্যাল ছাড়াও বিভিন্ন প্রোডাক্ট এর ব্যবহার পদ্ধতি ও সহযোগিতা বিষয় জটিল লেখাও লেখেন। বর্তমানে এই প্রফেশন ভীষণ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এবং যথেষ্ট লাভজনকও প্রমাণিত হচ্ছে।
টেক টিউটর : এই কন্সেপ্ট টি খুব পুরোনো নয় তবে বেশ জনপ্রিয় ,টেক টিউটর রা হলেন সেই সব শিক্ষক যারা অনলাইনের মাধ্যমে ছাত্র ছাত্রীদের শিক্ষা দিয়ে থাকেন এবং এই কাজের সবথেকে বড় সুবিধা হলো পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তে বসে ক্লাস নেওয়া যায় এবং একসাথে অজস্র স্টুডেন্ট এর সাথে যুক্ত হয় যায় ,এই কাজে অভিজ্ঞতার ওপর ও কি বিষয় পড়েছেন তার ওপর অর্থ উপার্জন নির্ভর করে।
পডকাস্টার : পডকাস্টার হলেন সেই ব্যক্তি যিনি নিজে অডিও বা ভিডিও রেকর্ডিং করেন এবং তা ইন্টারনেট এ প্রচার করেন। এই কাজে সাধারণত কোনো বিষয় নিয়ে অডিও বা ভিডিও সিরিজ বানানো হয় ও সম্প্রচার করা হয় ,এই কাজের ক্ষেত্রে উপার্জন নির্ভর করে আপনার ভিডিও অডিও এর জনপ্রিয়তার উপর।
কম্পিউটার স্টোর অপারেটর : আপনি একজন কম্পিউটার স্টোর অপারেটর হিসেবেও কাজ করতে পারেন ,এখানে আপনাকে একটি কম্পিউটার স্টোরের দেখা শোনা করতে হবে এবং প্রতিটি কম্পিউটার এর বিশেষত্ব ও সঠিক তথ্য আপনার নখ দর্পনে থাকতে হবে। বাজারে এই কাজের প্রচুর চাহিদা রয়েছে।
ইউ এক্স সার্ভিসেস : ইউ এক্স কথার অর্থ হলো ইউসার এক্সপিরিয়েন্স ,এই কাজের মূল লক্ষ্য হলো কোনো প্রোডাক্ট ব্যবহার করার পরে বা আগে কাস্টমার দেড় সুবিধা অসুবিধা বুঝে সেটি ডিসাইন করা ,সংহত করা সেই ব্রান্ডের খ্যাতি মাথায় রেখে। এই কাজের জন্য বড় বড় কোম্পানি গুলো বিশেষজ্ঞ কর্মী নিয়োগ করে।
গেম ডেভেলপার : এই কাজের নাম থেকেই বোঝা যাচ্ছে যে এখানে গেম তৈরি ,প্রোগ্রামিং ,টেস্টিং ও লংচিং সমস্ত কাজই করতে হয় ,কোনো ব্যক্তি যদি স্বাধীনভাবে এই ব্যবসা করতে চান তাহলে করতে পারেন বা এক বা একাধিক কোম্পানির সাথে গেম তৈরির কন্ট্রাক্টও করে নিতে পারেন। এই কাজের চাহিদা সবসময়ই থাকে কারণ স্মার্ট ফোন এর যুগে সর্ব স্তরের মানুষ আজকাল গেম খেলতে অভ্যস্ত এছাড়া কম্পিউটার ও ট্যাব এর জন্যও গেমের চাহিদা থাকে।
প্রযুক্তির জগতে আরো অনেক আকর্ষণীয় ও নতুন ধরণের ব্যবসার সুযোগ রয়েছে যেমন ,কোয়ালিটি এশিওরেন্স সার্ভিস ,ডেস্কটপ পাবলিশিং ইত্যাদি। নিজের যোগ্যতা এবং সামর্থ্য অনুযায়ী ব্যবসা বাছুন ও একটি সফল কর্মজীবন তৈরী করুন।