ওয়াল পেইন্টিং মুড ভালো রাখার সেরা অস্ত্র
মনস্তাত্ত্বিকরা বলেন আপনার মুড কেমন থাকবে তার অনেকখানি নির্ভর করে আপনার বাডির ইন্টেরিয়ারের উপর। কিভাবে ঘর সাজানো রয়েছে তার উপর। আর এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মানুষের মনকে প্রভাবিত করে তা হল দেওয়াল। কারণ এটিই ঘরের সবচেয়ে বড় অংশ। দেওয়ালে ঠিকঠাক রঙ না থাকলে মুড ভালো থাকবে না। দেওয়ালে এক্সাইটিং কিছু থাকলে মনও ভালো থাকবে। এছাড়াও আপনার বাড়ির ইন্টেরিয়ারের উপরে নির্ভর করছে আপনার সম্পর্কে মানুষের কি ধারণা হবে তা। ঘর সাজানোর ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ক্যানভাসই হল দেওয়াল তাই সবার প্রথম নজর থাকে এই দেওয়ালে। দেওয়ালে কি রঙ হবে তা নিয়ে যেমন নানা এক্সপেরিমেন্ট চলছে তেমনই সেই দেওয়ালের উপর বাহারি ওয়ালপেইন্টিং রাখার চলও এখন খুবই ইন। ওয়ালপেইন্টিং হতে পারে হাজারো রকমের, হাজারো বাহারের। আপনার সামর্থ্য অনুযায়ী ওয়ালপেইন্টিং লাগান আর হাজার গুন শোভা বাড়ান আপনার দেওয়ালের৷
সাদামাটা দেওয়ালের পরিবর্তে দেওয়ালে একটা ওয়াল-পেইন্টিং রাখার পিছনে নিজের মনের মাধুরি মিশিয়ে থাকে। ভারতের ইতিহাস দেখলে বোঝা যায় চিত্রশিল্প সবসময়ই বিখ্যাত। এমনি দেওয়াল ওয়াল-পেইন্টিং এর জাদুতে হয়ে ওঠে মন মোহিনী।
ওয়ালপেইন্টিং সাধারণত দু রকম হয়
- দেওয়ালের উপর কোনো ছবি বা ভাস্কর্য লাগানো।
- দেওয়ালকেই ক্যানভাস হিসেবে ব্যবহার করে তার উপরে নানা কারুকার্য করা। দুটো বিষয়ই এখন অত্যন্ত জনপ্রিয়। দেওয়ালে লাগানোর ছবি বা ভাস্কর্য আপনি অনলাইনে এবং নানা ইন্টেরিয়রের দোকানে বা শো-পিসের দোকানে পাবেন। বহুমূল্য রেয়ার পিস চাইলে আপনি যেতে পারেন কিউরিও শপগুলিতে। বা সরাসরি শিল্পীকে বরাত দিয়ে তার থেকেও নিতে পারেন। ঘরের আকার, রঙ, আলো ইত্যাদির সাথে মানানসই হলে এগুলি ঘরের শোভাকে যে বহুগুণ বাড়িয়ে দেয় তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
সামঞ্জস্য রেখেও করতে পারেন ওয়ালপেইন্টিং
চাইলে আপনি দেওয়াল জুড়ে শিল্পীকে নিয়ে আঁকিয়ে নিতে পারেন পছন্দসই ছবি। আবার এই দুই মিডিয়াম কে মিস্কঅ্যান্ডম্যাচ করেও ব্যবহার করতে পারেন। সেগুলি হয়ে ওঠে আরও আকর্ষণীয়।
আপনি বা আপনার পরিবারের কেউ গল্প পড়তে ভালবাসেন। তাহলে দেয়ালজুড়ে কোনো একটা গল্প তুলে ধরতে পারেন। আর যদি বেড়াতে ভালবাসেন তাহলে চাইলে আঁকাতে পারেন আপনার প্রিয় কোনো জায়গার ছবি। তা না হলে ওই ঘরের কোনো ছবি বা শৌখিন আলমারি বা বুক সেলফ এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেও করতে পারেন ওয়ালপেইন্টিং।
পরিবারের সবাইকে একসঙ্গে অনেক সময় পাওয়া যায় না। কাজের চাপে বা কোনও প্রয়োজনে পরিবারের দু একজন সদস্য হয়ত বাইরে থাকে। দেখা হয় অনেকদিন ছাড়া ছাড়া। তাতে কি ? ওয়াল পেন্তিং আছে তো। ধরুন, দেওয়ালে আঁকালেন একটি গাছের ছবি। গাছের শাখা-প্রশাখার জায়গাগুলোয় টাঙিয়ে রাখলেন পরিবারের সদস্যদের বা প্রিয় মানুষদের ছবি। গাছের শাখা-প্রশাখার বিস্তার করলেও সবার সঙ্গে মূল কাণ্ডের যোগাযোগ থাকে। তেমনি পরিবারের দু একজন সদস্য হয়ত বাইরে থাকলেও বাড়ির টান ও তাদের রয়েছে এটা বোঝা যায় এই শিল্পে।
আরও নতুন নতুন মজার মজার জিনিস ভাবতে পারেন। যেমন, কোথাও হয়ত থাকল শুধু একটা পাতার ছবি। কোনো ঘরের দেয়াল ছবিতে দেখা গেল, বৈদ্যুতিক খুঁটি আর তারের ওপর বসে আছে কাক বা অন্য কোনো পাখি।
ওয়ালপেইন্টিং এর ক্ষেত্রে যে সব জিনিস মনে রাখতে হবে
- ঘরের দেয়াল যদি পুরনো হয় তাহলে ভালো করে ঘসে মেজে তাকে ভদ্রস্থ রুপ দিতে হবে।
- এরপরের কাজ প্রাইমার। অর্থাৎ, দেওয়ালে পছন্দের রঙের একটা প্রলেপ দিতে হবে।
- তবে খেয়াল রাখতে হবে রঙের ঘনত্ব র কথা। যদি গাঢ় রঙ ফুটিয়ে তুলতে চান, তাহলে প্রয়োজন অনুযায়ী রঙের প্রলেপ দিতে হবে। সেক্ষেত্রে রঙের প্রলেপ বেশ কয়েকবার হতে পারে।
- অনেক ক্ষেত্রে এমনটা ও হতে পারে, আপনার অলরেডি গাঢ় রঙের দেয়াল রয়েছে। তখন গাঢ় রঙের দেয়াল কে হালকা করতে হবে প্রয়োজন অনুযায়ী। সেক্ষেত্রে কাজে দিতে পারে এক কোট প্লাস্টিক পেইন্ট।
- কোন ঘরে কেমন ছবি রাখবেন তা নির্ভর করবে আপনি ওই ঘরটি কি কাজে ব্যবহার করছেন। পড়ার ঘর হলে শিক্ষামূলক কোনও ছবি আঁকতে পারেন। আবার যদি ড্রয়িং রুম হয় তখন কোনও প্রাকিতিক দৃশ্যের অঙ্কনচিত্র করতে পারেন।
- অঙ্কনচিত্র তার মাধুর্য ধরা দেয় আলোর ঝলকানিতে। সেই দেওয়ালে আঁকুন যেখানে সূর্যের আলো এবং রাতে ইলেকট্রিকের আলো ভালভাবে পড়ে। ফাঁকা দেয়াল বেছে নিন। যাতে করে সবার নজর ওখানে যায়।
এইসব মাথায় রেখে প্ল্যান করুন কিভাবে কোন দেওয়ালে ওয়ালপেইন্টিং করবেন। আর ডিজাইনারকে দিয়ে মনের মাধুরি তে সাজিয়ে নিন আপনার ঘর। নিজের মনের শান্তি নিন, আর লোকে দেখে যেন বলে- " ঘর হো তো এইসা"।