ব্রেকিং নিউজ

img/news-single-img/post-img-01.jpg

বাঙালী মাত্রেই সৃজনশীল। তার চিন্তা ও কল্পনার জগৎ অনেকদূর অবধি বিস্তৃত। শিল্প সংস্কৃতির নানা দিকে তার অবারিত যাতায়াত। গতবাঁধা জীবনকে কখনই সে পছন্দ করেনি। সাতটা-পাঁচটারডিউটিতে আবদ্ধ থাকলেও তার মন পড়ে থাকে দিকশূন্যপুরেই। গান কবিতা নাটক সিনেমা নিয়ে চায়ের ঠেক থেকে পাড়ার ক্লাবের ক্যারামবোর্ড - সবজায়গাতেই তর্কের তুফান তোলে বাঙালী। বোধহয় একজন বাঙালীও পাওয়া যাবেনা যে জীবনে একটাও কবিতা লেখেনি। সে প্রেমে ধোঁকা খেয়েও হতে পারে আবার প্রিয় কাউকে প্রপোজ করে সাফল্য পেয়েও হতে পারে। কবিতা মাস্ট। অথচ এক বিখ্যাত কবি বলেছেন, 'সকলেই কবি নয়, কেউ কেউ কবি'। শুধু কবিতার ক্ষেত্রেই না যে কোনো শিল্পই চাইলেই চর্চা করা যায় না। সেই সম্পর্কে লেখাপড়া জ্ঞান অর্জন করাটা প্রথম দরকার। নাহলে শিল্প রচনা তো নয়ই শিল্পের উপভোক্তাও হওয়া যায় না।

 

 

সিনেমা জগৎ প্রায় সবাইকেই টানে। সিনেমা দেখতে পছন্দ করেননা এমন লোক পাওয়াই মুশকিল। সিনেমার জগতের নায়ক নায়িকেচরিত্ররা আমাদের জীবনের অঙ্গ হয়ে ওঠে। অথচ, এই ফিল্ম তৈরির পেছনে যে থাকে অসংখ্য মানুষের অমানুষিক পরিশ্রম তা অনেকসময়েই চোখে পড়ে না। অনেক মানুষের সম্মিলিত শ্রমে তৈরি হয় আস্ত একটি সিনেমা। আর এদের নেতৃত্ব দেন সিনেমার পরিচালক। আসলে সিনেমা পরিচালকেরই মাধ্যম।

অভিনেতা অভিনেত্রীদের মত পরিচালকেরা সবসময় লাইমলাইটে না থাকলেও তিনিই সিনেমার সব। তার দৃষ্টিভঙ্গিই সিনেমার নিয়ন্ত্রক। বহু মানুষই চিত্র পরিচালনার কাজে আসতে চান। আসতে চাইলেই আসা সহজ নয়। প্রথমত এখন পরিচলনার ক্ষেত্রে প্রথাগত শিক্ষার জন্য নানা ফিল্ম ইন্সটিটিউট হয়েছে সেখান থেকে শেখার সুযোগ আছে। এরপর সেটে থেকে হাতেকলমে শেখার সুযোগ তৈরি করাটাই আসল। পরিচালকের সাথে সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করার সুযোগ পেলে সেটাই সবচেয়ে সুবিধের।

 

চিত্র পরিচালক এর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ গুণ হল স্টোরিটেলিং স্কিল

 

কারণ প্রযোজক থেকে কাঙ্খিত অভিনেতা অভিনেত্রী প্রত্যেককেই আপনার সিনেমার চিত্রনাট্য সম্পর্কে আগ্রহী করে তোলাটাই প্রথম কাজ। আর সেই আগ্রহ তৈরি করতে হলে আপনার গল্পকে নির্মেদ ও আকর্ষণীয়ভাবে পরিবেশন করার দক্ষতা আপনার ভেতরে থাকতেই হবে। নাহলে প্রথম রাউন্ডেই আপনি পিছিয়ে পড়বেন।

 

আবার আপনি আপনার সিনেমার মাধ্যমে আপনার গল্পটি কিভাবে দর্শকের কাছে পৌঁছাতে পারছেন, আপনার সেই গল্প বলার ধরণ কতখানি ইম্প্রেসিভ ও ইউনিক হতে পারছে সেটাও আপনার স্টোরিটেলিংস্কিলই নির্ধারণ করে।

 

গল্প বলার ধরণের উপরেই দাঁড়িয়ে আছে সিনেমার ভবিষ্যত

 

প্রথমত, সিনেমায় একটা গল্প ঠিকমতো বলতে হবে। যে গল্পটা আধুনিক সমাজ, আমাদের চারপাশের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে। বিশ্বাসযোগ্য হতে হবে। পিরিয়ড ফিল্মের ক্ষেত্রেও সমসময়কে মাথায় রেখে একই কথা বলা যায়। ছবির মধ্যে এমন কিছু থাকতে হবে, যা দর্শককে আনন্দিত করে, বিনোদিত করে অথবা চিন্তা করার রসদ জোগাবে। এরপর আপনার মূল গল্পকে কোন ফোকাল পয়েন্ট থেকে অর্থাৎ কার প্রেক্ষাপট থেকে বলছেন কি তার সেটিং বা সময়সীমাই বা তার কি এই ধরণের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন মাথায় রাখা দরকার। সাহিত্যের ভাষায় একে বলে আখ্যানতত্ত্ব। সিনেমার ক্ষেত্রেও এই তত্ত্ব সমান গুরুত্বপূর্ণ। তারপর আপনার মুনশিয়ানার উপর নির্ভর করে আপনি ঠিক করবেন কতখানি আপনি বলবেন আর কতখানি দর্শকের বিবেচনার উপর ছেড়ে দেবেন। এই ক্ষেত্রে পরিমিতিবোধ দেখাতে পারাটাই মহৎ সিনেমার লক্ষণ। মনে রাখবেন আপনার গল্প বলার ধরণের উপরেই দাঁড়িয়ে আছে সিনেমার ভবিষ্যত৷

 বিবর্তনের মূল ভিত সিনেমার গল্প

১৮৯৫ সালের ২৮শে ডিসেম্বর তারিখে প্যারিস শহরে লুমিয়েরভ্রাতৃদ্বয় তাদের তৈরী দশটি ছোট ছোট চলচ্চিত্র প্রথমবারের জন্য বাণিজ্যিকভাবে প্রদর্শন করেন। চলমান ছবিকে প্রজেকশন বা অভিক্ষেপনের মাধ্যমে প্রথম সফলভাবে প্রদর্শনের নিদর্শন হিসাবে এই তারিখটিকেই গণ্য করা হয়। সেদিন থেকে আজ অবধি নানাভাবে বিবর্তন ঘটেছে সিনেমার, সে সাবালক হয়েছে, এসেছে  নিত্যনতুন টেকনোলজির ব্যবহার। কিন্তু তার মূল ভিত্তি সেদিনের মত আজও একই আছে। তা হল - সিনেমার গল্প। তাই বলাই যায়, স্টোরিটেলিংস্কিলের উপরেই অনেকখানি নির্ভর করে পরিচালক হিসেবে একজন ব্যক্তি তার সিনেমায় কতখানি সফল।

You Might Also Like

Our Newsletter

স্কিল নিউজ