ব্রেকিং নিউজ

img/news-single-img/post-img-01.jpg

কংক্রিটের জঙ্গল আর কালো ধোঁয়ার দেশে এক ছটাক আরাম দেয় সবুজ। সৌন্দর্য্যের জন্য তো বটেই। পৃথিবীর ভারসাম্য রক্ষা করার জন্যও সবুজের জুড়ি মেলা ভার। বিশেষজ্ঞরা বারংবার বলছেন গাছ গাছালির পরিমাণ বাড়িয়ে তোলার জন্য। একদিকে যেমন বিশ্বে প্রতিবছর গড় উষ্ণতা এক ডিগ্রি করে বাড়ছে অন্যদিকে দুই মেরুতে ক্রমশ গলছে বরফ। বিশ্ব উষ্ণায়ননের এই দুনিয়ায় উদ্ভিদ নানা ভাবে ঠেকিয়ে রেখেছে ধ্বংসকে। ভূমিক্ষয় রোধ থেকে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বৃদ্ধি এই সবেতেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে গাছ। বৃক্ষজাত যে সব জিনিস মানুষের নিত্য প্রয়োজনে ব্যবহার হয় তাও অত্যন্ত পরিবেশ বান্ধব। এই নানা গুণের কারনেই কথায় আছে, একটি গাছ একটি প্রাণ।

 

আর এই উদ্ভিতকে পাথেয় করেই এই সময়ে গড়ে তোলা যায় এক লাভজনক ব্যবসা। একইসাথে এই ব্যবসা পরিবেশের কাজেও লাগে। একে বলা যায় নার্সারির ব্যবসা। ব্যখ্যা করে বললে নানা ধরণের উদ্ভিতের বীজ ও তা রক্ষনাবেক্ষনের সামগ্রী বিকিকিনির ব্যবসা৷ এই ব্যবসা এখন ক্রমশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। প্রচুর মানুষ আছেন যাদের শখই হল বাগান করা। নানা বাহারী গাছের সমাহারে তারা এমন বাগান গড়ে তোলেন যাতে চোখের আরাম হয়। আবার এখন পরিবেশের কথা মাথায় রেখে সচেতনভাবে বৃক্ষরোপণের পরিমাণও বৃদ্ধি পেয়েছে। আর ফল হিসেবে বাড়ছে নার্সারির ব্যবসা। সাধারণত তিনরকম গাছের চারা থাকে নার্সারিতে৷ ফুল গাছের চারা, ফল গাছের চারা আর সৌন্দর্য্যবর্দ্ধক পাতাবাহার জাতীয় গাছের চারা। এই তিনরকম চারারই ব্যপক চাহিদা। এলাকা অনুযায়ী অর্থাৎ মাটি, জলবায়ুর, বৃষ্টির পরিমাণ ইত্যাদির উপর নির্ভর করে একেক জায়গায় একেক গাছের চারার চাহিদা বেশি কম হয়ে থাকে।

কম বিনিয়োগে অনেক বেশি লাভ নিয়ে আসা সম্ভব নার্সারিতে

সাধারণ হিসেব অনুযায়ী একটি প্রমান মানের নার্সারিতে মাসে ৪০-৫০ হাজার টাকা অবধি লাভ থাকে। মরসুমের সময়ে তা আরও বর্দ্ধিত হয়। নার্সারিতে গাছের পাশাপাশি সার, ওষুধ, টব এবং কৃষি যন্ত্রপাতিও বিক্রি করা হয়। পারিবারিক আর্থিক চাহিদা মেটাতে বা আঞ্চলিক ব্যাপক চাহিদার কথা মাথায় রেখেই বহু যুবক যুবতী ফুল, ফল, মশলা, বনজ প্রভৃতি গাছের চারা বিক্রি করে যথেষ্ট লাভবান হয়েছে।

 

কেরিয়ার গড়তে যারা নার্সারির চিন্তা করছেন, তাদের নিজেদের বিষয়টা গুছিয়ে নিতে হবে প্রথমে। বাণিজ্যিকভাবে নার্সারি করার জন্য প্রথমেই দরকার সরকারি অনুমতি। নার্সারি আইনের আলোকে যে জমিতে নার্সারি করবেন সেই জমির কাগজপত্র অর্থাৎ নিজের হলে দলিল, লিজ হলে তার পক্ষে কাগজপত্র, ভাড়া হলে সে-সংক্রান্ত চুক্তিনামার ফটোকপিসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জমা দিতে হবে। এরপর মাথায় রাখতে হবে কয়েকটি বিষয়। যেমন - নার্সারির জায়গা নির্বাচন করার আগে সেখানকার আবহাওয়া, মাটি ইত্যাদি সম্পর্কে খোঁজ নিতে হবে। দেখতে হবে যাতে বৃষ্টির ফলে জল না জমতে পারে। আর দেখতে হবে পরিবহন বা বীজ সরবরাহের ব্যবস্থা কতখানি উন্নত করা যায়।

মনে রাখা দরকার, নার্সারি ব্যবসায় কিন্তু খুবই কম পুঁজির প্রয়োজন হয়। অর্থাৎ কম বিনিয়োগে অনেক বেশি লাভ নিয়ে আসা সম্ভব এই ব্যবসাতেই। 

সরকার এই নার্সারি শিল্পকে উৎসাহিত করতে নানারকম বিনামূল্যে কোচিং করায়। সেগুলিতে অংগ্রহণ করলে অনেক সংগঠিতভাবে এই ব্যবসা করা যায়৷

এবং সর্বশেষে সবচেয়ে জরুরি বিষয় হল নিয়মিত এই বীজগুলির প্রতি পরিচর্যা। সবসময় এই বিষয়ে অত্যন্ত নজর দেওয়া উচিৎ। দেখতে হবে  জল - হাওয়া - আলো কেমন পায়। মাঝেমাঝেই মাটি বদলাতে হবে তার।

 

এই বিষয়গুলি খেয়াল রাখলেই নার্সারি শিল্প খুব একটা কঠিন কাজ নয় মোটেই। বাডির লাগোয়া বা আশেপাশেও এই নার্সারি তৈরি করে আপনি আয় করতে পারেন। উন্নত গাছের সাথে সাথে সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি তো বটেই সামগ্রিকভানে আমাদের পৃথিবী ও তার সামঞ্জস্যের জন্য এই নার্সারি শিল্প হয়ে উঠেছে ব্লু আইড ইন্ডাস্ট্রি। এখনও বিষয়টায় বহুল প্রতিযোগিতা শুরু হয়নি। তাই এখম থেকেই লেগে পড়ুন এই ব্যবসায় আর বাডিতে বসে বসেই উপার্জন করুন।

You Might Also Like

Our Newsletter

স্কিল নিউজ