চামড়ার এই ব্যবসাগুলিতে লাভের অঙ্ক অনেক বেশি
কম বিনিয়োগে বেশি লাভ হতে পারে এইরকম ব্যবসাই মানুষ সবসময় খুঁজে থাকেন। পৃথিবীর বর্তমান আর্থিক পরিস্থিতিতে এইরকম ব্যবসার সন্ধান পাওয়া যথেষ্ট মুশকিল। কোভিড ও লকডাউন অর্থনীতিকে তীব্র ধাক্কা দিয়েছে৷ এই মুহূর্তে কোনো ব্যবসাই খুব মসৃনভাবে চালানো যাচ্ছে না। তবুও খোঁজ চলছেই কোন ব্যবসা এনে দিতে পারে লাভ। চামড়ার ব্যবসায় প্রবেশ করে অনেক মানুষ লাভের মুখ দেখছেন। দীর্ঘদিন ধরেই চামড়ার ব্যবসা লাভজনক ব্যবসা বলেই পরিচিত৷ চামড়া দিয়ে যেহেতু নিত্যপ্রয়োজনীয় নানা জিনিস তৈরি হয় তাই অর্থনীতিতে যতই টালমাটাল চলুক, সেই জিনিসগুলি কিনতে মানুষ বাধ্য হন৷ তাই এই ব্যবসায় কখনই চরম ক্ষতির মুখ দেখতে হয় না।
চামড়ার এই ব্যবসাগুলিতে লাভের অঙ্ক অনেক বেশি
চামড়া দিয়ে তৈরি যে দুটি জিনিস মানুষের জীবনে প্রতিদিনের সঙ্গী সেদুটি হল জুতো ও ব্যাগ। এই দুটি ছাড়া মানুষের জীবন চলে না। জুতো ও ব্যাগ দুই ক্ষেত্রেই চামড়ার বিকল্প নানা উপাদান এলেও চামড়ার কৌলিন্য এখনও সমান। টেকসই তো বটেই, চামড়ার তৈরি জুতো বা ব্যাগ এখনও অন্য যে কোনো ব্যাগ ও জুতোর চেয়ে সৌন্দর্য্যেও এগিয়ে থাকবে। পুরুষের বেল্ট ও ওয়ালেটের ক্ষেত্রেও এই একই কথা প্রযোজ্য।
পুরুষের ব্যবহার্য্য জিনিসের পাশাপাশি মহিলাদের ক্ষেত্রেও চামড়ার জুতো ও ব্যাগ খুবই আকর্ষণীয়। বর্তমানে বিভিন্ন ডিজাইনারলেদার জুতো ও ভ্যানিটি ব্যাগ সেই আকর্ষণকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
ঘড়ির স্ট্র্যাপও তৈরি হয় চামড়া থেকে। এবং চামড়ার স্ট্র্যাপই বাজারে বেশি বিকোয়। যেহেতু জাতি লিঙ্গ বয়স সামাজিক অবস্থান নির্বিশেষে সকলেই রিস্টওয়াচ ব্যবহার করেন তাই এই ব্যবসাতেও ক্ষতির সম্ভাবনা কম।
শীতকালে বা শীত প্রধান এলাকায় পরার জন্য চামড়ার জ্যাকেটের জয়জয়কার সর্বত্র। বহুদিন থেকে আজ অবধি লেদার জ্যাকেট ফ্যাশনে ট্রেন্ডি। আগে শুধু পুরুষদের মধ্যে জনপ্রিয়তা থাকলেও বর্তমানে তা মহিলাদের মধ্যেও সমান জনপ্রিয়।
বৰ্তমানে দেশের লেদার টেকনোলজি এতই উন্নত এবং আকর্ষণীয় যে এই দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও উচ্চ দামে চামড়ার জিনিসগুলি পাড়ি দিয়েছে। সাবেকি ডিজাইনের পাশাপাশি তরুণ প্রজন্মও চামড়া দিয়ে বিভিন্ন জিনিস তৈরী করার ফলে ডিজাইনে এবং শৈলী তে নতুনত্ব আসছে আবার কোথাও কোথাও নতুন পুরোনো মিলিয়ে ইনোভেটিভ প্রোডাক্ট ও তৈরী হচ্ছে। দেশীয় বাজারের পাশাপাশি চামড়া প্রোডাক্টের একটা আন্তর্জাতিক বাজার রয়েছে। আমেরিকা, জাপান, হংকং এবং ফ্রান্সের মত দেশ গুলো মূলত চর্মজাত দ্রব্যের খরিদ্দার যথেষ্ট। উন্নত মানের কাজ দেখাতে পারলে এই আন্তর্জাতিক বাজার ধরতে পারার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে।
এই সবছাড়াও বাজারে চলছে চামড়ার তৈরি নানা সরঞ্জাম, ঘর সাজানোর জিনিস। যেগুলির চাহিদাও বেশ ভালোই।
এছাড়াও এই সমস্ত কিছুর সাথেই রয়েছে ট্যানারির ব্যবসা। চামড়া প্রক্রিয়াকরণের এই ব্যবসায় লাভের অঙ্ক অন্যান্য ব্যবসার তুলনায় অনেক বেশি। এতই বেশি যে এই ব্যবসার ক্ষেত্রে নানারকম অসামাজিক অসাধু কার্যকলাপেরও আনাগোনা হয়। সেই সম্পর্কে সচেতন থেকে এই ব্যবসা করতে পারলে চরম আর্থিক উন্নতির সম্ভাবনা রয়েছে।
তাই বিশ্বজোড়া অর্থনৈতিক ধসের প্রভাবে এই ব্যবসায় সাময়িক কিছু ধাক্কা লাগলেও অত্যন্ত প্রাচীন এই ব্যবসা মানুষের জীবনের সাথে জড়িত। তাই এই ব্যবসার সম্ভাবনা যথেষ্ট উজ্জ্বল। চামড়ার এই ধরণের ব্যবসাগুলিতে আপনি চোখ বুজে বিনিয়োগ করার কথা ভাবতে পারেন।