সুস্থ থাকার সেরা উপায় - সময় মেনে খাওয়া দাওয়া
শরীর স্বাস্থ্য নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে প্রথমেই বিখ্যাত অ্যামেরিকান সাইকলজিস্ট ও লেখিকা অ্যানে উইলসন স্কেফ এর একটি উক্তি মনে পড়ে যাচ্ছে ,"Good health is not something we can buy. However, it can be an extremely valuable savings account." অর্থাৎ ,শরীরের সঠিক যত্ন বা খেয়াল না রাখতে পারলে এই মূল্যবান সম্পত্তিটি আপনি হারালেও হারাতে পারেন । একজন মানুষের সুস্থ শরীর তার প্রথম প্রয়োজনীয়তা কারণ একজন সুস্বাস্থ্যের অধিকারি মানুষই জীবনের যেকোন পর্যায় বা ক্ষেত্রে সফলতা অর্জন করতে পারেন । আমাদের সকলকেই শৈশবকালে গুরুজনেরা সুস্বাস্থ্যের জন্য নানারকম উপদেশ দিয়ে থাকেন কিন্তু কালের গতিতে হোক বা সময়ের অভাবে আমরা সেগুলির বেশিরভাগই কাজে লাগাতে পারিনা ।
বিশ্বায়নের এই যুগে প্রতিটি মানুষই নিজের নিজের শিক্ষাক্ষেত্রে, কর্মক্ষেত্রে ও জীবন যুদ্ধে যারপরনাই ব্যস্ত । স্বভাবতই, শরীরের যত্ন ও খেয়াল কোনটাই ঠিকভাবে বজায় রাখতে পারেননা ফলে নানাবিধ অসুখ বিসুখ বাসা বাঁধে মানবশরীরে । এই কারনে অনেক মানুষ শারীরিক অসুস্থতার সঙ্গে সঙ্গে মানসিকভাবেও বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছেন । ন্যাশানাল হেলথ সার্ভের একটি রিপোর্ট অনুযায়ী ভারতের মত বিপুল জনসংখ্যার দেশে হার্টের সমস্যা , বন্ধ্যাত্ত, দৃষ্টিশক্তি হীনতা , সংক্রমণ এবং মধুমেহ ইত্যাদি অসুখ খুবই স্বাভাবিক ঘটনা হয়ে উঠেছে এর সাথে যোগ হয়েছে বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারির তাণ্ডব ।
বর্তমান পরিস্থিতিতে আমাদের প্রত্যেকের উচিৎ শরীর স্বাস্থ্যের দিকে বিশেষ মনোযোগ দেওয়া এবং কিছু উপযোগী নিয়ম পালন করা ,যেমন - পুষ্টিকর খাবার খাওয়া , পর্যাপ্ত জল খাওয়া ,সারাদিনে কম করে ৮ ঘণ্টার ঘুম এবং প্রয়োজনে নিজের চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া । তবে সব নিয়ম গুলির মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্তপূর্ণ হল সঠিক সময় মেনে খওয়া দাওয়ার অভ্যাস ,শুনতে কঠিন মনে হলেও ঘড়ি ধরে নিয়ম মেনে খাবার খাওয়ার অভ্যাস আপনাকে অচিরেই একজন সুস্বাস্থ্যের অধিকারি করে তুলবে ।
সময় ধরে খওয়া দাওয়া করার সহজ কিছু উপায়
১) ব্রেকফাস্ট বা প্রাতরাশ আমরা প্রায় প্রত্যেকেই করি কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা যে ঘুম থেকে ওঠার ১ ঘণ্টার মধ্যেই এই কাজটি সেরে ফেলা উচিৎ কারন এটি আমাদের মেটাবলিজম ভাল করে এবং সারাদিনের কাজ করার শক্তি যোগায় ।
২) দৈনন্দিন জীবনে আমাদের সাধারণত তিনটি প্রধান মিল বা খাবার খাওয়ার রেওয়াজ আছে । প্রাতরাশ, মধ্যাহ্নভোজ এবং রাতের খাবার কিন্তু কাজের মধ্যে থাকার কারনে বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই সময়ের হিসেব থাকেনা আর সেটাই শরীরের ভীষণ ক্ষতি করে তাই এমনভাবে নিজের কাজের রুটিন করুন যাতে একটি মিল ও বাদ না যায় ।
৩) আমাদের খেয়াল রাখতে হবে যে প্রতিটি মিল বা খাবারের মধ্যে যেন খুব বেশি সময়ের ব্যবধান না হয় ,ধরুন যদি আপনি সকাল ৭ টায় প্রাতরাশ করেন তবে চেষ্টা করতে হবে যাতে দুপুরের খাবার খাওয়ার আগে মাঝখানে আপনি অল্প কিছু খান মানে পেট যেন খালি না থাকে কারন এতে আপনার হজম ক্ষমতা ঠিক থাকবে এবং শরীরও ভাল থাকবে ।
৪) নিয়ম করে সময় ধরে খাবার খেলে শরীরে একটা ইটিং ক্লক তৈরি হয়ে যায় এবং লক্ষণীয় বিষয় হল একটা সময়ের পরে আপনার ওই নির্দিষ্ট সময় গুলিতেই খিদে অনুভব হবে ,এর অর্থ আপনি সুস্থ আছেন ।
একজন ব্যক্তির সুস্থ থাকাটা অনেকটাই তার নিজের উপর নির্ভর করে ,তার মানে এটা নয় যে মানুষ কোনো কারনে অসুস্থ হলে সেটা তার অপরাধ। কিন্তু নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম কানুন মেনে চললে অবশ্যই অনেক শারীরিক সমস্যা দূরে রাখা সম্ভব হয়, সুতরাং আজই সঠিক সময় মেনে সঠিক খাওয়া দাওয়া শুরু করুন এবং নিজের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখুন ।