বাড়িতে বসে পুতুল তৈরির ব্যবসা অল্প বিনিয়োগে ভালো রোজগার
পুতুল নেবে গো, পুতুল .........
আজকের এই স্মার্টফোন সর্বস্ব যুগেও শৈশবের বন্ধু তালিকা থেকে পুতুল সরে যায়নি। শিশুরা এখনও তাদের খেলার সাথী হিসেবে পুতুলকেই পছন্দ করে। শুধু শিশুরা কেন, অনেক বড় বয়স অবধি মানুষ পুতুলকে সঙ্গী হিসেবে আদরে রাখে৷ এর কিছু মনস্তাত্ত্বিক কারণ থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। স্মার্টফোন সহ নানা গ্যাজেট ছোটদের খেলার সাথী হলেও রক্তমাংসের মানুষের বিকল্প তারা কখনই হয়ে উঠতে পারে না আবার পুরোপুরি বিকল্প না হলেও পুতুল আসলে মানুষ, পশু বা প্রিয় চরিত্রেরই রেপ্লিকা, যাকে ইন্দ্রিয় দ্বারা অনুভব করা যায়৷ তাই এর কদর অনেক বেশি। আবার অনেকে আজকের এই পৃথিবীতে নিঃসঙ্গতা বৃদ্ধিকেও পুতুলপ্রেমের অন্যতম কারণ হিসেবে মনে করেন৷
যে কারণেই হোক না কেন মানুষের এই পুতুলপ্রীতির কারণেই একে ঘিরে একটি লাভজনক ব্যবসা গড়ে উঠেছে। বহু মানুষ পুতুল শিল্পের সাথে যুক্ত হয়ে রোজগার করছেন। কিন্তু এই ব্যবসা বাড়ি থেকেও সহজেই করা যায়। হয়ত কারখানার মত বিপুল রেঞ্জে নয় কিন্তু যথেষ্ট ভালোভাবেই বাড়ি থেকে এই কাজ করা যায়৷ এবং আয়ও যথেষ্ট ভালোই।
পুতুল তৈরির কাঁচামাল
পুতুল তৈরি করতে তেমন কোনো কাঁচামাল লাগে না। যা যা লাগে অতি সহজেই তা সংগ্রহ করা যায়। প্রয়োজন সাদা বা হালকা রং এর ফ্লানেল কাপড়। চোখের জন্য কালো পুঁতি। কালো সুতো ও উল। লাল সুতো সূচ, লম্বা রঙিন কাপড়ের ফালি, কাগজ, পেন্সিল, ট্রেসিং পেপার, কার্বন পেপার, কাঠের গুড়ো, তুলো। কাপড় সেলাই করা সূচ ছোট কিংবা বড়, কাঁচি (বড় অথবা ছোট), ব্লেড ইত্যাদি।
কিভাবে পুতুল তৈরি করবেন
প্রথমে কাগজে পছন্দমত একটি পুতুলের ছবি এঁকে নিতে হবে। পুতুলটির চোখ, নাক, মুখ, চুল খুব স্পষ্টভাবে আঁকতে হবে এবং দু’ পাশের দুটি হাত আঁকুন। নীচে দুটি পা আলাদা করতে হবে। এই ছবিটি ট্রেসিং পেপারে তুলে, কার্বন পেপারের সাহায্যে কাপড়ে আঁকতে হবে। কাপড়ের মোট দু’বার আঁকা হল ও দুটি পুতুলের ছবির আকারের টুকরো কাঁচি দিয়ে কেটে নেওয়া হবে। একটি টুকরোতে মুখের অংশে নাক, কান ভ্রূ ইত্যাদি কালো সুতোর সাহায্যে সূচ সেলাই করা হল ছবির মত করে, লাল সুতো দিয়ে ঠোঁট সেলাই করে নিন। বিশেষ কাজ আর বাকি নেই। এবার সবশেষে, রঙিন, ছাপা নানা কাপড় দিয়ে পুতুলটিকে ইচ্ছেমত সাজিয়ে নিন। চাইলে কাপড়ের এই আবরণটার ভেতরে প্রচুর তুলো ভরে দিতে পারেন। তাতে একেবারে বাজারচলতি পুতুলগুলির মতই দেখাবে আপনার কাজ।
পুতুলের চাহিদা ও যোগান
যেহেতু, এটি একটি শিল্প আর শিল্পের মূল কথাই হল ক্রিয়েটিভিটি তাই আপনার সৌন্দর্য্যবোধ ও শিল্পগুণই আপনার তৈরি পুতুল কতটা ভালো হল তা নির্দ্ধারণ করবে৷ প্রাথমিক পদ্ধতিটি জানা থাকলে নানারকম আদলে আপনি এই পুতুল বানাতে পারেন। বাজারের চাহিদাও আপনাকে বুঝতে হবে।
এরপর আপনার বানানো পুতুলগুলি সরাসরি মার্কেটে সাপ্লাই দিতে পারেন অথবা ব্যক্তিগত উদ্যোগে বেচাকেনা করতে পারেন। ইন্টারনেট দুনিয়ায় এখন নানা সেলিং সেন্টার তৈরি হয়েছে। সেখানেই আপনি আপনার কাজের ডিসপ্লে ও বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে ব্যবসা করতে পারেন। যেহেতু তেমন পুঁজি বা বিনিয়োগ লাগে না এবং খুব কম পয়সাতেই কাঁচামাল পাওয়া যায় তাই আপনার হাতের কাজ ভালো হলে এর থেকে অনেক টাকাই আপনি লাভ করতে পারেন।