ব্রেকিং নিউজ

img/news-single-img/post-img-01.jpg

গোটা বিশ্বের কাছেই আর্থিক মন্দা এখন একটি চিন্তার বিষয়। প্রায় কোনো ব্যবসায় বিনিয়োগ করে বিনিয়োগকারী নিশ্চিন্ত হতে পারছেন না। কবে অর্থনীতির চাকা আবার এগোবে তাও কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারছে না। কিন্তু এরমধ্যে দাঁড়িয়েই সন্ধান করতে হবে নতুন নতুন উপায় যা এই মন্দার বাজারেও এনে দেবে সমৃদ্ধি। আর তার জন্য চাই এমন কোনো উপায় যাতে কম বিনিয়োগে ঘরে আনা যায় বেশি লাভ এবং বিনিয়োগের কোনো অংশই যাতে নষ্ট না হয়।

 

পৃথিবী যত এগোচ্ছে, ততউ উন্নত হচ্ছে বিজ্ঞান আর তার হাত ধরে প্রভুত উন্নত হয়েছে প্রযুক্তি। যার হাত ধরে প্রায় সবক্ষেত্রেই এসেছে নানা বৈপ্লবিক পরিবর্তন। মানুষ সেই পরিবর্তনকে নিজেদের সুবিধার ক্ষেত্রে কাজে লাগিয়ে এসেছে বরাবর। সেইজন্যেই মানুষ উন্নত প্রাণী। এভাবেই সে জ্ঞান থেকে সুযোগ আর সুযোগকে সাফল্যে পরিণত করেছে।

 

মৎস চাষ বহুদিন ধরেই লাভজনক ব্যবসা হিসেবে পরিচিত৷ বহু মানুষ এর মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করে। যেহেতু ভারতের একটা বড় অংশ বিশেষত বাংলা, উড়িষ্যা প্রভৃতি এলাকার মানুষের ফুড হ্যাবিটে মাছ একেবারে বাধ্যতামূলক তাই এই ব্যবসা বেশ ধারাবাহিক। কিছু মাছ সরাসরি পুকুর বা সমুদ্র থেকে ধরে আনা হয়। আবার বেশিরভাগ মাছই আজকের দিনে কৃত্রিমভাবে চাষ করে উৎপাদন করা হয়। এই চাষের ক্ষেত্রে দেখা যায় কিছু বাড়তি খরচ। যা এড়ানো গেলে আরও লাভের পরিমাণ আরও বৃদ্ধি হত৷ সেই উপায় খুঁজতে খুঁজতেই আবিষ্কার হয় কম্পোজিট ফিশ কালচার এর।

 

কম্পোজিট ফিশ কালচারের মূল কথা হল, বিভিন্ন প্রজাতির মাছকে এক পুকুর বা জলাধারে রেখে চাষ করা।

 

কম্পোজিট ফিশ কালচারের মূল কথা হল, বিভিন্ন প্রজাতির মাছকে এক পুকুর বা জলাধারে রেখে চাষ করা। এতে দুটো সুবিধা হয়। এক, মাছের খাবার কম পরিমাণ লাগে আর দুই, অন্য স্পিসিসের মাছের মধ্যে খাবার নিয়ে সংঘাত হয় না, মাছ মারা যায় না। এতে দ্বিগুণ লাভ হয় মাছের ব্যবসায়। তাই এই কম্পোজিট চাষ এখন খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

 

রুই, কাতলা, মৃগেল জাতীয় মাছ এক পুকুরে তার অনুপাত বজায় রেখে তাদের প্রয়োজনীয় খাবার ও পরিবেশের ব্যবস্থা করে বছরে বিঘাপ্রতি ১০০ থেকে ১৪০ কেজি মাছ বছরে পাওয়া যায়। তবে এখন, গ্রাস কার্প, সিলভার কার্প ও সাইপ্রিনাস কার্প প্রভৃতি মাছও এক সাথে চাষ করে দেখা গেছে এই উৎপাদন আরও কিছু বাড়ানো যায়। একে নিবিড় চাষও বলা হয়।

 

কাতলা ও সিলভার কার্প উভয়েই জলের উপরের স্তরের মাছ। কিন্তু এদের উভয়ের মধ্যে খাদ্যাভ্যাসে সামান্য পার্থক্য লক্ষ করা গেছে। অনেকগুলো রেকারযুক্ত ফুলকা সিলভার কার্পকে প্রধানত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র উদ্ভিদকণা গ্রহণ করতে সাহায্য করে। কাতলা মাছের ফুলকার ভিতরের গঠন প্রাণীকণা গ্রহণে বেশি উপযোগী। তাই এরা (কাতলা ও সিলভার কার্প ) জলের একই স্তরে থাকলেও খাদ্যের জন্য প্রতিযোগিতা কমই হয়। এ ছাড়া পুকুরের উপরি জলস্তরের অতিরিক্ত উদ্ভিদকণা বা প্রাণীকণা যা অনেক সময় সূর্যালোকের প্রবেশে বাধার সৃষ্টি করে তা-ও দূর হয়।

 

 রুই মাছ ও গ্রাস কার্প জলের মধ্য স্তরেই বিচরণ করে। রুই মাছ ছোট অবস্থায় প্রাণীকণা ও বড় হলে উদ্ভিদকণা, জলজ উদ্ভিদের নরম অংশ খায়। গ্রাস কার্পের প্রধান খাদ্য ঝাঁঝি, ঘাস, জলজ উদ্ভিদ ইত্যাদি। তাই এদের মধ্যেও খাবারের জন্য কোনও প্রতিযোগিতা নেই।

 

মৃগেল ও সাই প্রিনার্স কার্প উভয়েই জলাশয়ের নীচের স্তরের মাছ। জলের নীচের তলায় প্রচুর মৎস্য-খাদ্য থাকে। এই দুই প্রকার মাছই পুকুরের নীচের তলার খাবার ও মাটির সাথে লেগে থাকা মৎস-খাদ্য প্রাণীজ খাদ্য ও জৈব খাদ্য খেয়ে থাকে। সাইপ্রিনাস কার্পের অতিরিক্ত খাদ্যাভাসের জন্য এরা সর্বভুক এবং জলের নীচের স্তরের পচা গলা জৈব পদার্থ খায়। এই ভাবে জলের নীচের স্তরের মৎস্য-খাদ্যের পূর্ণ সদ্ব্যবহার হয়ে থাকে। মোট উৎপাদন বাড়ে।

 

পুকুরের গোটা অংশটি একবারে ব্যবহার করে একসাথে ছয় প্রজতির মাছ উৎপাদন করা যায় এই কম্পোজিট ফিশ কালচারের মাধ্যমে। কস্টিং ও কমে আসে অনেকখানি। তাই এই পদ্ধতির প্রতিই এখন ঝুঁকে থাকছেন অধিকাংশ মৎস চাষিরা। 

You Might Also Like

Our Newsletter

স্কিল নিউজ